* বছরে ১০ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য রফতানি হয় ভারতে * বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে গার্মেন্টস পণ্যবোঝাই ৩৬ ট্রাক * বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকা পণ্যবাহী ২০ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান * নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে হিলি ও আখাউড়া স্থলবন্দরে
বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। এতে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে ভারতে বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রফতানি। গত বছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। এর মধ্যে পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যই বেশি। এসব পণ্য ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়েছে। এরপরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে কোনো তৈরি পোশাক ভারতের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাক নিয়ে বেনাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬টি ট্রাক। অপরদিকে ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকে গেছে খাদ্যপণ্যবাহী ২০টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান। এছাড়াও ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে হিলি ও আখাউড়া স্থলবন্দরে। শুধুমাত্র নাভা শেভা এবং কলকাতা সমুদ্র বন্দর দিয়ে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক ভারতে যেতে পারছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রফতানি হচ্ছে দেশটিতে। এ দেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের একটি অন্যতম বড় বাজার ভারত। ওই দেশের মূল ভূখণ্ডের পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে (সেভেন সিস্টার্স) বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের বড় বাজার রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামে ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস)/ ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত বিভিন্ন খাদ্যসহ প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাবপত্র রফতানি করা যাবে না বলে জানিয়েছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন বা এলসিএসের জন্যও এটি প্রযোজ্য হবে। এ পরিস্থিতিতে ভারতে খাদ্যপণ্য রফতানি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে জানিয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যত ভারতের সঙ্গে রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ নৌপথে পণ্য পরিবহন বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর জন্য প্রতিযোগিতামূলক হবে না। খরচের পাশাপাশি সময়ের কারণে আমরা পারবো না। আবার সব জায়গায় নৌপথে পণ্য যাবেও না। বিশেষ করে সবচেয়ে বড় বাজার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সে সুযোগ নেই। কামরুজ্জামান কামাল বলেন, যেসব বন্দর দিয়ে আমরা রফতানি করি সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্থলবন্দর ব্যবহার করে এসব সামগ্রী আমদানিতে যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত, সেটি কার্যকর হলে আমাদের পণ্য রফতানি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে, বন্ধ হয়ে যাবে। এ নিয়ে আমরা সরকারের উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।
ড্যানিশ ফুডের হেড অব বিজনেস দেবাশীষ সিংহ বলেন, মূলত সেভেন সিস্টার্সের বাজারে ভারতের নিজস্ব পণ্যের চেয়ে বাংলাদেশের পণ্যের আধিক্য বেশি ছিল। কারণ ভারতের মূল ভূখণ্ডের কোম্পানিগুলোর চেয়ে আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো কম খরচে সেখানে পণ্য পৌঁছাতে পারতো। সে সুযোগ বন্ধ করার জন্য এই পদক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে। এ দেশের কোম্পানিগুলোর জন্য বড় দুঃসংবাদ এটি। দেবাশীষ সিংহ বলেন, ভারতে রফতানির জন্য আমরা ছয়টি স্থলবন্দর ব্যবহার করি, এর সবগুলো বন্ধ করা হয়েছে। ভারত এখন কেবল কলকাতা ও মুম্বাই সমুদ্রবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য আমদানির সুযোগ দিচ্ছে। এ দুটি বন্দর রফতানিকারকদের একদম কাজে আসবে না, ওইসব দিয়ে রফতানিও হয় না। তিনি বলেন, এখন অন্য কোনোভাবে রফতানি করার সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশি কোম্পানি খরচে পোষাতে পারবে না। কারণ আমরা আগে বর্ডার পার হলেই আসাম, গোহাটি, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামে পণ্য পৌঁছাতে পারতাম স্থলপথে। ওই পথে না গেলে নৌপথে অনেক ঘুরে, বারবার ট্রান্সপোর্ট পরিবর্তন করে খরচে টিকতে পারবো না।
এদিকে, গত এপ্রিলে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে নিজ দেশের বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের পণ্য যাওয়ার ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে ভারত। এখন স্থলবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারতীয় আমদানিকারকদের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দুটি সিদ্ধান্তই বাংলাদেশের রফতানির জন্য নেতিবাচক। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক উদ্যোগ প্রত্যাশা করছেন রফতানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, এ ধরনের অশুল্ক প্রতিবন্ধকতা বাংলাদেশি রফতানিকারকদের জন্য জটিলতা তৈরি করবে। দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিকাশেও বাধা সৃষ্টি করবে। নিয়ন্ত্রণমূলক তদারকি একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার, তবে এ ধরনের হঠাৎ ও বেছে বেছে কিছু বন্দরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে স্থলপথে বাণিজ্যের খরচ বাড়িয়ে দেয় এবং অনিশ্চয়তা তৈরি করে। আমি আশা করি, দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার চেতনায় এসব অশুল্ক বাধা পুনর্বিবেচনা করা হবে। গঠনমূলক সংলাপ ও বাণিজ্য সহজীকরণে আরও ভালো সমন্বয় উভয় দেশের জন্যই মসৃণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করতে সহায়ক হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টিকে আমরা গভীরভাবে দেখছি। এভাবে নানা বিষয়ে নিষেধাজ্ঞায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শিগগির আমরা ভারতের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করবো।
অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে তৈরি পোশাক আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে গতকাল রোববার সকাল থেকে কোনও পণ্যের চালান ভারতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এ অবস্থায় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাক নিয়ে বেনাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬টি ট্রাক। এসব পণ্যের রফতানি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও পণ্যের চালানগুলো বেনাপোল থেকে ফিরিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের দিকে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কোন কোনও প্রতিষ্ঠান।
রফতানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার। এতে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা ক্ষতির মুখে পড়বে। বেনাপোল স্থলবন্দরের তুলনায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে পণ্য ভারতে পাঠাতে দ্বিগুণ খরচ হবে। একইসঙ্গে পণ্য পৌঁছাতেও বেশি সময় লেগে যাবে। এতে ক্রয়াদেশ কমে যাবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক মাসের মাথায় ভারতের এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দিলো। যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার কথা বলেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত বছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রফতানি করেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রফতানি করেছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার পণ্য। যেসব দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বাড়ছে, তার মধ্যে ভারত একটি। যেখানে প্রতি বছর প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশের মতো পোশাকপণ্য স্থলপথেই রফতানি হয়। ফলে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা এই খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। গত শনিবার রাতে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদফতর এক বিবৃতিতে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, গার্মেন্টস/ তৈরি পোশাক পণ্যসহ সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর ফলে ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় ৩৬টি গার্মেন্টস পণ্যবোঝাই বাংলাদেশি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে। নিষেধাজ্ঞার আদেশে বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, গার্মেন্টস/ তৈরি পোশাক পণ্যসমূহ শুধু কলকাতা সমুদ্রপথে আমদানি করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। যেসব পণ্যের এলসি/টিটি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে সেসব পণ্য যাতে আমদানি করা যায়, তার জন্য কাস্টমসে আলোচনা চলছে। তবে এ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ?ভারত সরকার স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস সামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিপাকে পড়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। স্থলপথে এসব পণ্য রফতানিতে খরচ অনেক কম হতো। কিন্তু সমুদ্র ও বিমানপথে এসব পণ্য রফতানিতে খরচ অনেক বেশি পড়বে। এতে অনেক ব্যবসায়ী লোকসানে পড়বেন।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, বছরে ১০ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি হয় ভারতে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করেন। এই পথে রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে খাদ্যপণ্য, পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, কেমিক্যাল, টিস্যু, মেলামাইন ও মাছ উল্লেখ্যযোগ্য।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, এ সংক্রান্ত কোনও চিঠি আমরা পাইনি। পত্রপত্রিকায় দেখেছি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার পর্যন্ত সব পণ্য রফতানি হয়েছে। তবে রোববার সকাল থেকে অন্যান্য পণ্য রফতানি হলেও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাক জাতীয় কোনও পণ্য রফতানি হয়নি। বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি ৩০-৩৫ ট্রাক পণ্য এখানে আটকে আছে।
এদিকে ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকে গেছে খাদ্যপণ্যবাহী ২০টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান। এরমধ্যে ১০টি খালি ট্রাক রয়েছে। গতকাল রোববার সকালে বুড়িমারী সীমান্ত পার হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা ছিল।
বুড়িমারী কাস্টম কর্মকর্তা রাশেদ জানান, ভারতে রফতানির জন্য প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, সজীব গ্রুপ ও আকিজ গ্রুপের ২০টির মতো বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্যবোঝাই ট্রাক আটকা রয়েছে। গত শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব পণ্যবাহী ট্রাক বুড়িমারী স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার রাহাত হোসেন বলেন, ভারত কিছু খাদ্যপণ্য ও তুলার সুতার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এজন্য বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে এসব মালামাল ভারতে যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো চিঠি পাইনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত শনিবার বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক (আরএমজি) ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রীসহ কিছু পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদফতর (ডিজিএফটি) এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। বাংলাদেশ সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় তুলা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো ভারত। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু পণ্য ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোনো স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। কেবল নাভা শেভা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়েই প্রবেশের অনুমতি থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা ভারতের মধ্যদিয়ে পরিবহনকারী বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, যা নেপাল ও ভুটানের উদ্দেশে পাঠানো হবে। এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে।
এছাড়াও ভারত নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের অন্যতম রফতানিমুখী স্থলবন্দর আখাউড়া ও হিলিতে। নিয়মিত যাওয়া প্লাস্টিক পণ্য ও তুলার বর্জ্য রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছে। তবে নিষেধাজ্ঞা জারির পর গতকাল রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্দরের রফতানিতে কোনো প্রভাব পড়েনি।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, এ বন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ তুলা বর্জ্য ভারতে রফতানি হতো। এ ছাড়া বিভিন্ন কম্পানির প্লাস্টিক পণ্য যেত। নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন এসব পণ্য রফতানি করা যাবে না।
বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হাসিবুল হাসান জানান, বন্দরের রফতানি কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে যেসব পণ্য আমদানিতে ভারত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেগুলো তারা না নিলে তো ব্যাবসায়িক কার্যক্রমে প্রভাব অবশ্যই পড়বে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশ থেকে খাদ্যসহ পণ্য রফতানি বন্ধ হবে
- আপলোড সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১২:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১২:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ